Skip to main content

২+২=৪+২=৬

একটা বিশেষ কারনে ___নক্ষত্রপুন্জ থেকে অক্ষরিক অর্থে উন্নত প্রানী এসেছে পৃথিবীতে, মানুষের বেশে, একজন সৎ মানুষের সন্ধানে।

শী : কেমন আছো মি: হি? আমি সুদুর ____নক্ষত্রপুন্জ থেকে এখানে এসেছি, আমাদের একজন সৎ মানুষের প্রয়োজন, তাকে নিয়ে যাবো আমাদের স্বপ্নের জগতে যেখানে শুধুই আনন্দ আর আনন্দ, কোন কিছু্রই অভাব নেই সেখানে। আমরা সৃষ্টি জগতের উৎপত্তির উৎস কি তা বের করার চেষ্টা করে যাচ্ছি....তোমাদের মতই....তবে মনে হয় আমরা তা বের করার ক্ষেত্র খুব কাছাকাছি চলে এসেছি। এক্ষেত্রে আমাদের একজন ভাল মানুষের প্রয়োজন। ....কোন ভুল করা চলবেনা...তাহলে সমস্যা হবে। কিন্তু যদি ভাল মানুষের বদলে খারপ মানুষ হয় তাহলে আমাদের পরিক্ষা নিরিক্ষা সব বিফলে যাবে।

(হি এর মন ছিল ধান্দাবাজি আর কু-মতলবে ভরা। সে শী এর কথা বিশ্বাস করল বলে মনে হল না)

হি : ..আপনে ভালা লোকের কাছেই আইছেন...হে: হে: ...খোঁজার দরকার কি? ..ম্যাডাম, আপনের সামনে খাড়ানো আমিই সেই লোক যারে আপনে খুজতাছেন। ...

শী : যদি তোমার কোন আপত্তি না থাকে... জলদি চল আমার সাথে, ...ঐ যে দুরে যে যান টা দেখছো..তাতে করেই তোমাকে নিয়ে যাব আমাদের দেশে। ... আমাকে তোমাদের পৃথিবী থেকে আনুষাঙ্গিক আরো কিছু জিনিস নিয়ে যেতে হবে।

শী আর হি ঐ বিশেষ জানে চড়ে আকাশে উড়াল দিল। ...হি চিন্তা করেও বের করতে পারলনা এই বিশেষ জান টি কোন ধাতু দিয়ে বানানো। ...সে ভাবল যে ধাতু দিয়েই হোক পুরোটা ভেংগে ভাঙ্গারীর দোকানে বেচতে পারলেও ভাল টাকা পাওয়া যাবে। ...সে একটা সুযোগের অপেক্ষায় থাকলো এবং সুযোগটা এসেই গেল। ....যানটি একটা বিশেষ জায়গায় থামলো। পাহাড়ি যায়গা, শুধু পাথর আর পাথর। শী যান থেকে নেমে কি যেন খুঁজতে গেল। হি ভাবলো এইতো সময় দ্রুত যানটি নিয়ে নিজের যায়গায় ফিরে যেতে হবে, ভাংগারি’র দোকানে ছেলেটাকে খবর দিতে হবে ...কত কি..। হি যান টাকে চালু করলো...কিছু দুর যেতেই নিয়ন্ত্রন হারালো।....এক পরযায়ে যানটি ধ্বংস হয়ে গেল। সকল ইচ্ছেগুলোকে সাথে করে হি ও ধ্বংস হয়ে গেল। ....শী ফিরে এসে তার বিশেষ যান আর হি কে কোথাও খুজে পেলনা, ....শী যথারীতি আবারো হতাশ হল, প্রত্যেকবার তার ঠিক কোন যায়গাতে ভুল হয় তা ভাবতে লাগল। ...ফিরে যেয়ে সে কি জবাব দেবে তাও ভাবলো, কিন্তু কিছুই পেলনা। ...এই একটা কারনেই অনেক চেষ্টা করা সত্বেও তাদের গবেষনাটা সফল হচ্ছেনা। ...শী অনেকবার চেষ্টা করেও একটা সৎ লোক জোগাড় করতে পারেনি।

গরু নিয়ে বড়ি ফিরতে ফিরতে বকস এর আজ দেরি হয়ে গেল। সন্ধ্যা নেমে যাওয়াতে চারিদিক অন্ধকার হয়ে গেল। ....তার অনেক দিনের ইচ্ছা পাশের বাড়ির শেফালিকে বিয়ে করার, যদিও মাতাব্বরের পোলার ঝামেলার কারনে তা আর সম্ভব হচ্ছেনা। ...প্রতি রাতে সে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে “তারাখসা” দেখার জন্য। যদি একবার দেখতে পারে, তার জীবন আর কিছুই লাগবে না, তার জীবনটাই ধন্য।

বকশের ইচ্ছে মনে হয় পুরন হলো আজ....সে দুর আকাশে আজ “তারাখসা” দেখলো....আর সংগে সংগে তার মনের ইচ্ছেটা জপ করতে করতে বাড়ি ফিরল। ...(যদিও ওটা তারাখসা ছিলনা...ওটা ছিল ঐ বিশেষ যান এবং হি এর ধ্বংস হওয়ার দৃশ্য) ...

পরদিন বকশ জানতে পারল মাতাব্বরের পোলারে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। তার নামে অনেকগুলো চাঁদাবাজির মামলা ছিল। ...বকশের মনে খুশি আর ধরেনা। ...সে শেফালির সাথে দেখা করল। ....কয়েকদিন পরেই তাদের বিয়ে হয়ে গেল।

>
>
>
>
পাদটিকা:
১। শী’রা কখনোই মিথ্যে বলতে বা মিথ্যে বলা ধরতে পারেনা।
২। শুধু মাত্র মনুষ প্রজাতিই মিথ্যে বলতে পারে আনায়েসে।
৩। প্রকৃতি কখনোই তার রহস্যময়তায় কোন ফাক রাখার চেষ্টা করেনা।


(শহীদুল ইসলাম মঞ্জু)

Popular posts from this blog

সিরাজুল আলম খান - ব্ল্যাক সোয়ান

মুক্তিযুদ্ধ চলা কালে ট্রেনিং সেন্টারে (ফোল্ডার হাতে) পরিচিতি :  সিরাজুল আলম খান, নোয়াখালীতে ১৯৪১ সালে জন্ম নেয়া এক জন ব্যাক্তি যে বাংলাদেশের জন্মের সাথে জড়িত অত্যান্ত নিবিড় ভাবে। অবিবাহিত একজন মানুষ যাকে বাংলাদেশের রাজনীতি সম্পর্কে সম্মক অবহিতজনের কাছে পরিচিত রহস্যপুরুষ হিসাবে, এছাড়া রাজনৈতিক নেতাদের কাছে তিনি পরিচিত তাত্ত্বিক (theorist) হিসাবে। সিরাজুল আলম খান ভিন্ন ভিন্ন তিন মেয়াদে প্রায় ৭ বছর কারাভোগ করেন। সিরাজুল আলম খান মেধাবী ছাত্র হিসাবে শিক্ষায়তনে সুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন। সিরাজুল আলম খানের বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রী অঙ্ক শাস্ত্রে হলেও দীর্ঘ জেল জীবনে তিনি দর্শন, সাহিত্য, শিল্পকলা, রাজনীতি-বিজ্ঞান, অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, সমাজ বিজ্ঞান, পরিবেশ বিজ্ঞান, সামরিক বিজ্ঞান, মহাকাশ বিজ্ঞান, সংগীত, খেলাধুলা সম্পর্কিত বিষয়ে ব্যাপক পড়াশোনা করেন। ফলে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের উপর গড়ে উঠে তাঁর অগাধ পাণ্ডিত্য এবং দক্ষতা। সেই কারণে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক নিযুক্ত হন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন রাজ্যের অসকস বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৯৬-’৯৭ সনে। নি

প্রাগৈতিহাসিক - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়

সমস্ত বর্ষাকালটা ভিখু ভয়ানক কষ্ট পাইয়াছে। আষাঢ় মাসের প্রথমে বসন্তপুরের বৈকুণ্ঠ সাহার গদিতে ডাকাতি করিতে গিয়া তাহাদের দলকে - দল ধরা পড়িয়া যায়। এগারজনের মধ্যে কেবল ভিখুই কাঁধে একটা বর্শার খোঁচা খাইয়া পলাইতে পারিয়াছিল। রাতারাতি দশ মাইল দূরের মাথা - ভাঙা পুলটার নিচে পেঁৗছিয়া অর্ধেকটা শরীর কাদায় ডুবাইয়া শরবনের মধ্যে দিনের বেলাটা লুকাইয়া ছিল। রাত্রে আরো ন ক্রোশ পথ হাঁটিয়া একেবারে পেহলাদ বাগ্দীর বাড়ি চিতলপুরে। পেহলাদ তাহাকে আশ্রয় দেয় নাই। কাঁধটা দেখাইয়া বলিয়াছিল , ' ঘাওখান সহজ লয় স্যাঙ্গাত। উটি পাকব। গা ফুলব। জানাজানি হইয়া গেলে আমি কনে যামু ? খুনটো যদি না করতিস _' ' তরেই খুন করতে মন লইতেছে পেহলাদ। ' ' এই জনমে লা , স্যাঙ্গাত। ' বন কাছেই ছিল , মাইল পাঁচেক উত্তরে। ভিখু অগত্যা বনেই আশ্রয় লইল। পেহলাদ নিজে বাঁশ কাটিয়া বনের একটা দুর্গম অংশে সিনজুরি গাছের নিবিড় ঝোপের মধ্যে তাহাকে একটা মাচা বাঁধিয়া দিল। তালপাতা দিয়া একটা

বর্তমান হিন্দু মুসলমান সমস্যা

১৯২৬ সালে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় একটি ভাষন দেন যার নাম “বর্তমান হিন্দু মুসলমান সমস্যা” । এটি বাঙলা প্রাদেশিক সম্মেলনে প্রদান করেন। পরে তা হিন্দু সংঘ পত্রিকায় ছাপা হয় ১৯ শে আশ্বিন ১৯৩৩ সালে। জাতীয় অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক  এর ভাষায় ১৯৩০ সালের দিকে প্রকাশিত শরৎচন্দ্রের বর্তমান হিন্দু মুসলমান সমস্যা পর এত ( আহামদ ছফার বাঙালি মুসলমানের মন ) প্রভোক্যাটিভ রচনা বাংলা ভাষায় পড়ি নাই। কোন একটা কথা বহু লোকে মিলিয়া বহু আস্ফালন করিয়া বলিতে থাকিলেই কেবল বলার জোরেই তাহা সত্য হইয়া উঠে না । অথচ এই সম্মিলিত প্রবল কন্ঠস্বরের একটা শক্তি আছে । এবং মোহও কম নাই । চারিদিক গমগম করিতে থাকে – এবং এই বাস্পাচ্ছন্ন আকাশের নীচে দুই কানের মধ্যে নিরন্তর যাহা প্রবেশ করে , মানুষ অভিভূতের মতো তাহাকেই সত্য বলিয়া বিশ্বাস করিয়া বসে । propaganda বস্তুত এই-ই । বিগত মহাযুদ্ধের দিনে পরস্পরের গলা কাটিয়া বেড়ানই যে মানুষের একমাত্র ধর্ম ও কর্তব্য , এই অসত্যকে সত্য বলিয়া যে দুই পক্ষের লোকেই মানিয়া লইয়াছিল , সে ত কেবল অনেক কলম এবং অনেক গলার সমবেত চীৎকারের ফলেই । যে দুই- একজন প্রতিবাদ করিতে গিয়াছিল , আসল কথা