Skip to main content

ধর্ম যেখানে সভ্যতাকে পেছনে ঠেলে দিয়েছে !!





আফগান যে উন্নত ছিল যে বিষয়ে আমার কোন সন্দেহ নাই । তবে ধর্মকে যে ভাবে দোষ দেয়া হচ্ছে তাতেই আমার আপত্তি। লোক জন দেখলাম এই ছবিটা শেয়ার করতেছে ।

আমাদের লেখক হুমায়ন আহমেদ যখন পিএইচডি করার জন্য আমেরিকাতে গিয়েছিলেন তখন তার ২ সহপাঠি ছিল আফগানের , যুদ্ধ শুরু হবার পর তার লেখাপড়া ছেড়ে দেশে চলে যান যুদ্ধে যোগ দিতে । তাদের আর কোন খোজ পান নি হুমায়ন আহমেদ।

আসল কথায় আসি । ৭৮ এর দিকে রাশিয়ার প্রত্যক্ষ মদতে রাশিয়াতে বামদের উৎপাত বেড়ে যায় , এখন যেমন আমাদের দেশে বামেদের উৎপাত হচ্ছে। ৭৯ এর এসে পাকিস্তানের ও আমেরিকার মদদে শুরু হয় মুজাহিদিনদের উত্থান , পাকিস্তানের নিজেদের নিরাপত্তার জন্য এ কাজে সহায়তা দিতে এক প্রকার বাধ্য হয় , অন্যদিকে আমেরিকার সহায়তার কারন ছিল ভারত মহাসাগরে নিজের প্রাধান্য বজায় রাখা ও ভিয়েতনাম যুদ্ধের হারের শোধ নেয়া । সে যুদ্ধ চলে ৯০ পর্যন্ত , এ সময়ে আফগান একটা সভ্য দেশ থেকে অসভ্য দেশে পরিনত হয় । আফগানের অর্থনীতি ছিল এবং আছে "কৃষি" ভিত্তিক । সে সময় আফগানে ভুমি উন্নয়নের জন্য বাধ দিয়ে সেচ ও কৃষি জমি বৃদ্ধি করা হয় । আফগানে আর যাই হোক আমাদের দেশের মততো আর অনুর্বর পাথুরে জমি নাই , কি বলেন ?? ৭৯-৯০ পর্যন্ত যুদ্ধে আফগানের সব চেয়ে বড় দুটি লাভ হয় ১. সম্পুর্ন ধ্বংশ অর্থনীতি ২. একটা শিক্ষিত জেনারেশন হারানো। সে সময় আমেরিকার কাছে মুজাহিদিন ছিল মুক্তিকামী জনগন , আলকায়েদা মুক্তিকামী মানুষের প্রতিচ্ছবি। অন্তত সিল্ভেস্টার স্ট্যালোনের র‍্যাম্বো দেখে তাই মনে হয়।

যুদ্ধ শেষে আমেরিকা রাশিয়া কে ধংস করার আনন্দে আফগানকে ঐ ধ্বংশ অবস্থাতেই রেখে পার্ট করতে চলে যায় । এদিকে কাজের অভাব ক্ষুধা দারিদ্রতা সব মিলিয়ে মানুষের জীবন হয়ে পরে আনন্দময় । এমনিতেই আফগান সমাজ গোত্রভিত্তিক , সে সময় গোত্রে গোত্রে চলছিল ভয়াবহ সংঘর্ষ । এসব ভঙ্গুর এর মাঝে সে সময় এই তালেবানেরাই সেন্ট্রাল গভমেন্ট কে পাশ কাটিয়ে জনগনের নিরাপত্তা কাজ এর ব্যাবস্থা তৈরি করা শুরু করে । অনেকের অপছন্দ হলেও এটাই সত্য। Peter Marsden এর The Taliban পড়ে দেখতে পারেন ।

তালিবান যখন সরকার তৈরি করলো , তখন ইউএন থেকে আফগানকে টাকা দেয়া হয় বামিয়ানের বৌদ্ধ মুর্তি সংস্কারের জন্য, well, দেশের মানুষ যখন কাজের অভাব খাদ্যের অভাব তখনই এই ধরনের ঐতিহ্য রক্ষার জন্য অর্থ আমাদের দেশে আকাক্ষার জিনিস হলেও তালিবাদের কাছে হয় নি । তারা বোমা মেরে উড়িয়ে দিয়েছিল বামিয়ানের বৌদ্ধমুর্তি। শিক্ষার অভাব , বুজলেন শিক্ষার অভাব।

সর্ব সাকুল্য ৭৯-২০০৯ পর্যন্ত যুদ্ধে কত মানুষ মারা গেল , কত মানুষ খাদ্যের অভাবে পুষ্টির অভাবে মারা গেল , কতজন শুধু জীবন বাচানোর জন্য পাচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার পরেও পপির চাষ করে , এসব প্রশ্ন অবান্তর হলেও, তারা কেন এখনো ধর্ম পালন করে এই প্রশ্ন খুব জোরে শোরে করা হয় হচ্ছে হবে ।

Popular posts from this blog

সিরাজুল আলম খান - ব্ল্যাক সোয়ান

মুক্তিযুদ্ধ চলা কালে ট্রেনিং সেন্টারে (ফোল্ডার হাতে) পরিচিতি :  সিরাজুল আলম খান, নোয়াখালীতে ১৯৪১ সালে জন্ম নেয়া এক জন ব্যাক্তি যে বাংলাদেশের জন্মের সাথে জড়িত অত্যান্ত নিবিড় ভাবে। অবিবাহিত একজন মানুষ যাকে বাংলাদেশের রাজনীতি সম্পর্কে সম্মক অবহিতজনের কাছে পরিচিত রহস্যপুরুষ হিসাবে, এছাড়া রাজনৈতিক নেতাদের কাছে তিনি পরিচিত তাত্ত্বিক (theorist) হিসাবে। সিরাজুল আলম খান ভিন্ন ভিন্ন তিন মেয়াদে প্রায় ৭ বছর কারাভোগ করেন। সিরাজুল আলম খান মেধাবী ছাত্র হিসাবে শিক্ষায়তনে সুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন। সিরাজুল আলম খানের বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রী অঙ্ক শাস্ত্রে হলেও দীর্ঘ জেল জীবনে তিনি দর্শন, সাহিত্য, শিল্পকলা, রাজনীতি-বিজ্ঞান, অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, সমাজ বিজ্ঞান, পরিবেশ বিজ্ঞান, সামরিক বিজ্ঞান, মহাকাশ বিজ্ঞান, সংগীত, খেলাধুলা সম্পর্কিত বিষয়ে ব্যাপক পড়াশোনা করেন। ফলে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের উপর গড়ে উঠে তাঁর অগাধ পাণ্ডিত্য এবং দক্ষতা। সেই কারণে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক নিযুক্ত হন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন রাজ্যের অসকস বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৯৬-’৯৭ সনে। নি

প্রাগৈতিহাসিক - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়

সমস্ত বর্ষাকালটা ভিখু ভয়ানক কষ্ট পাইয়াছে। আষাঢ় মাসের প্রথমে বসন্তপুরের বৈকুণ্ঠ সাহার গদিতে ডাকাতি করিতে গিয়া তাহাদের দলকে - দল ধরা পড়িয়া যায়। এগারজনের মধ্যে কেবল ভিখুই কাঁধে একটা বর্শার খোঁচা খাইয়া পলাইতে পারিয়াছিল। রাতারাতি দশ মাইল দূরের মাথা - ভাঙা পুলটার নিচে পেঁৗছিয়া অর্ধেকটা শরীর কাদায় ডুবাইয়া শরবনের মধ্যে দিনের বেলাটা লুকাইয়া ছিল। রাত্রে আরো ন ক্রোশ পথ হাঁটিয়া একেবারে পেহলাদ বাগ্দীর বাড়ি চিতলপুরে। পেহলাদ তাহাকে আশ্রয় দেয় নাই। কাঁধটা দেখাইয়া বলিয়াছিল , ' ঘাওখান সহজ লয় স্যাঙ্গাত। উটি পাকব। গা ফুলব। জানাজানি হইয়া গেলে আমি কনে যামু ? খুনটো যদি না করতিস _' ' তরেই খুন করতে মন লইতেছে পেহলাদ। ' ' এই জনমে লা , স্যাঙ্গাত। ' বন কাছেই ছিল , মাইল পাঁচেক উত্তরে। ভিখু অগত্যা বনেই আশ্রয় লইল। পেহলাদ নিজে বাঁশ কাটিয়া বনের একটা দুর্গম অংশে সিনজুরি গাছের নিবিড় ঝোপের মধ্যে তাহাকে একটা মাচা বাঁধিয়া দিল। তালপাতা দিয়া একটা

বর্তমান হিন্দু মুসলমান সমস্যা

১৯২৬ সালে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় একটি ভাষন দেন যার নাম “বর্তমান হিন্দু মুসলমান সমস্যা” । এটি বাঙলা প্রাদেশিক সম্মেলনে প্রদান করেন। পরে তা হিন্দু সংঘ পত্রিকায় ছাপা হয় ১৯ শে আশ্বিন ১৯৩৩ সালে। জাতীয় অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক  এর ভাষায় ১৯৩০ সালের দিকে প্রকাশিত শরৎচন্দ্রের বর্তমান হিন্দু মুসলমান সমস্যা পর এত ( আহামদ ছফার বাঙালি মুসলমানের মন ) প্রভোক্যাটিভ রচনা বাংলা ভাষায় পড়ি নাই। কোন একটা কথা বহু লোকে মিলিয়া বহু আস্ফালন করিয়া বলিতে থাকিলেই কেবল বলার জোরেই তাহা সত্য হইয়া উঠে না । অথচ এই সম্মিলিত প্রবল কন্ঠস্বরের একটা শক্তি আছে । এবং মোহও কম নাই । চারিদিক গমগম করিতে থাকে – এবং এই বাস্পাচ্ছন্ন আকাশের নীচে দুই কানের মধ্যে নিরন্তর যাহা প্রবেশ করে , মানুষ অভিভূতের মতো তাহাকেই সত্য বলিয়া বিশ্বাস করিয়া বসে । propaganda বস্তুত এই-ই । বিগত মহাযুদ্ধের দিনে পরস্পরের গলা কাটিয়া বেড়ানই যে মানুষের একমাত্র ধর্ম ও কর্তব্য , এই অসত্যকে সত্য বলিয়া যে দুই পক্ষের লোকেই মানিয়া লইয়াছিল , সে ত কেবল অনেক কলম এবং অনেক গলার সমবেত চীৎকারের ফলেই । যে দুই- একজন প্রতিবাদ করিতে গিয়াছিল , আসল কথা