Skip to main content

ছাত্র নেতা হবার প্রথম যোগ্যতা

অংকের মাস্টার হুমায়ন খান বিএসসি বিএড এর সামনে বসে অংক করছে মাসুদ । এই নিয়া ২ বারের মত মেট্রিক পরিক্ষা দিচ্ছে সে । এর আগে ক্লাস ৬ আর ৮ এ ফেল করার ইতিহাস আছে । তবে এইবার আর মনে হচ্ছে ফেল করা সম্ভব না । হুমায়ন খান বিএসসি বিএড স্যারের হাতে তার বাপ তুলে দিয়ে বলেছিল " স্যার আপনের হাতে তুইলা দিতাছি , হাড্ডি মাংশ আপনের , জানটা খালি ফিরত দিয়েন । "

মাসুদের বাবা বাজার এর দোকানদার সমিতির সভাপতি । সব সময় সাদা লুঙ্গি আর সাদা ফতুয়া পড়ে থাকেন । সারাক্ষন পান না হয় চা আর না হয় সিগারেট খেতেই থাকেন । লোকটা গলা খুব খনখনে টাইপের । কথা বললে মাসুদের ভেতরে সব শুকায়ে যায় । তখন বার বার পানি খাওয়া লাগে আর হিসু চাপে ।

আজকে হুমায়ন খান বিএসসি বিএড চৌবাচ্চার অংক করাচ্ছে । কি বলে এক পাইপ দিয়া পানি আসে আরেকটা ফুটা দিয়া যাইবো তার সময়ের হিসাব বাইর করতে হবে । মাসুদের এই ধরনের অংক ভালই লাগে না । পুরান ফুটা টাংকিতে পানি জমাইবো তার আবার সময় হিসাব করতে হইবো । হালারা আগে কেন পানি বাইর হবার রাস্তা সব কেন বন্ধ করে না ...

হুমায়ন খান বিএসসি বিএড হঠাত করে জালি বেত দিয়ে সপাং সপাং করে ২ ঘা দিলেন মাসুদের পিঠে । দ্রুত বললেন "ক কয় মিনিটে এক সেকেন্ড ??" অন্যমনস্ক অবস্থায় একে মার অন্যদিকে প্রশ্নের ধাক্কায় বলে বসে "৬০ মিনিটে এক সেকেন্ড... ৬০ মিনিটে এক সেকেন্ড..."

হুমায়ন খান বিএসসি বিএড তার জালি বেত দিয়ে অর্কেষ্টার সামনে দাঁড়ানো লোকটার মত ডানে বামে সমানে নাড়িয়ে যাচ্ছেন আর ময়মংসিংহের টোনে বলছেন ৬০ মিনিটে এক সেকেন্ড...৬০ মিনিটে এক সেকেন্ড... লেহাপড়ার সময় মন কই থাহে ... পিট্টা পিডের খাল তুইল্লায়াল্লাবাম । মাসুদ বাবাগো মাগো বলে চিতকার শুরু করে দিলো, সে সাথে তার ছোট ভাই ফরিদ পড়ার শব্দ উচু করে দিলো । মাসুদের বাবা হাকিম সাহেব প্রশান্ত চেহারায় তার বিবিকে বললেন এক কাপ চা দিতে চিনি বেশি হবে ।

সেই মাসুদ এখন ছাত্রলীগ এর নেতা । তার গাড়ি থেকে ৩ কেজি গাজা উদ্ধার হয় । লোকজনেদের সবক দিতে দেখি ফোনে । ... এতে আমার কোন আপত্তি নাই । খালি জানতে চাই কেমনে ৬০মিনিটে এক সেকেন্ড হয় ।

ছাত্রলীগ নেতার গাড়ি থেকে গাঁজা জব্দ



Popular posts from this blog

সিরাজুল আলম খান - ব্ল্যাক সোয়ান

মুক্তিযুদ্ধ চলা কালে ট্রেনিং সেন্টারে (ফোল্ডার হাতে) পরিচিতি :  সিরাজুল আলম খান, নোয়াখালীতে ১৯৪১ সালে জন্ম নেয়া এক জন ব্যাক্তি যে বাংলাদেশের জন্মের সাথে জড়িত অত্যান্ত নিবিড় ভাবে। অবিবাহিত একজন মানুষ যাকে বাংলাদেশের রাজনীতি সম্পর্কে সম্মক অবহিতজনের কাছে পরিচিত রহস্যপুরুষ হিসাবে, এছাড়া রাজনৈতিক নেতাদের কাছে তিনি পরিচিত তাত্ত্বিক (theorist) হিসাবে। সিরাজুল আলম খান ভিন্ন ভিন্ন তিন মেয়াদে প্রায় ৭ বছর কারাভোগ করেন। সিরাজুল আলম খান মেধাবী ছাত্র হিসাবে শিক্ষায়তনে সুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন। সিরাজুল আলম খানের বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রী অঙ্ক শাস্ত্রে হলেও দীর্ঘ জেল জীবনে তিনি দর্শন, সাহিত্য, শিল্পকলা, রাজনীতি-বিজ্ঞান, অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, সমাজ বিজ্ঞান, পরিবেশ বিজ্ঞান, সামরিক বিজ্ঞান, মহাকাশ বিজ্ঞান, সংগীত, খেলাধুলা সম্পর্কিত বিষয়ে ব্যাপক পড়াশোনা করেন। ফলে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের উপর গড়ে উঠে তাঁর অগাধ পাণ্ডিত্য এবং দক্ষতা। সেই কারণে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক নিযুক্ত হন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন রাজ্যের অসকস বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৯৬-’৯৭ সনে। নি

প্রাগৈতিহাসিক - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়

সমস্ত বর্ষাকালটা ভিখু ভয়ানক কষ্ট পাইয়াছে। আষাঢ় মাসের প্রথমে বসন্তপুরের বৈকুণ্ঠ সাহার গদিতে ডাকাতি করিতে গিয়া তাহাদের দলকে - দল ধরা পড়িয়া যায়। এগারজনের মধ্যে কেবল ভিখুই কাঁধে একটা বর্শার খোঁচা খাইয়া পলাইতে পারিয়াছিল। রাতারাতি দশ মাইল দূরের মাথা - ভাঙা পুলটার নিচে পেঁৗছিয়া অর্ধেকটা শরীর কাদায় ডুবাইয়া শরবনের মধ্যে দিনের বেলাটা লুকাইয়া ছিল। রাত্রে আরো ন ক্রোশ পথ হাঁটিয়া একেবারে পেহলাদ বাগ্দীর বাড়ি চিতলপুরে। পেহলাদ তাহাকে আশ্রয় দেয় নাই। কাঁধটা দেখাইয়া বলিয়াছিল , ' ঘাওখান সহজ লয় স্যাঙ্গাত। উটি পাকব। গা ফুলব। জানাজানি হইয়া গেলে আমি কনে যামু ? খুনটো যদি না করতিস _' ' তরেই খুন করতে মন লইতেছে পেহলাদ। ' ' এই জনমে লা , স্যাঙ্গাত। ' বন কাছেই ছিল , মাইল পাঁচেক উত্তরে। ভিখু অগত্যা বনেই আশ্রয় লইল। পেহলাদ নিজে বাঁশ কাটিয়া বনের একটা দুর্গম অংশে সিনজুরি গাছের নিবিড় ঝোপের মধ্যে তাহাকে একটা মাচা বাঁধিয়া দিল। তালপাতা দিয়া একটা

বর্তমান হিন্দু মুসলমান সমস্যা

১৯২৬ সালে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় একটি ভাষন দেন যার নাম “বর্তমান হিন্দু মুসলমান সমস্যা” । এটি বাঙলা প্রাদেশিক সম্মেলনে প্রদান করেন। পরে তা হিন্দু সংঘ পত্রিকায় ছাপা হয় ১৯ শে আশ্বিন ১৯৩৩ সালে। জাতীয় অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক  এর ভাষায় ১৯৩০ সালের দিকে প্রকাশিত শরৎচন্দ্রের বর্তমান হিন্দু মুসলমান সমস্যা পর এত ( আহামদ ছফার বাঙালি মুসলমানের মন ) প্রভোক্যাটিভ রচনা বাংলা ভাষায় পড়ি নাই। কোন একটা কথা বহু লোকে মিলিয়া বহু আস্ফালন করিয়া বলিতে থাকিলেই কেবল বলার জোরেই তাহা সত্য হইয়া উঠে না । অথচ এই সম্মিলিত প্রবল কন্ঠস্বরের একটা শক্তি আছে । এবং মোহও কম নাই । চারিদিক গমগম করিতে থাকে – এবং এই বাস্পাচ্ছন্ন আকাশের নীচে দুই কানের মধ্যে নিরন্তর যাহা প্রবেশ করে , মানুষ অভিভূতের মতো তাহাকেই সত্য বলিয়া বিশ্বাস করিয়া বসে । propaganda বস্তুত এই-ই । বিগত মহাযুদ্ধের দিনে পরস্পরের গলা কাটিয়া বেড়ানই যে মানুষের একমাত্র ধর্ম ও কর্তব্য , এই অসত্যকে সত্য বলিয়া যে দুই পক্ষের লোকেই মানিয়া লইয়াছিল , সে ত কেবল অনেক কলম এবং অনেক গলার সমবেত চীৎকারের ফলেই । যে দুই- একজন প্রতিবাদ করিতে গিয়াছিল , আসল কথা