Skip to main content

নাম সমাচার


আজকাল বাচ্চাকাচ্চাদের নাম রাখা একটা শিল্পের পর্যায়ে চলে গেছে, আমাদের নাম নিয়া আমাদের বাপ মায়েরা এতো কষ্ট করে নাই মনে হয়। আমাদের সময় প্রতিক্লাসে ২-৩ জন রাসেল, রুবেল, রাজিব, সজিব থাকতোই আর কমন ছিল ৩ অক্ষরের নাম , মেয়েদের ক্ষেত্রে ২ অক্ষরের। সিমা, রিমা, বৃষ্টি, রুমা শান্তা আরো কত কি । আমাদের বাপ মায়ে নাম রাখার সময় খালি একটা জিনিস মাথায় রাখতো 'নামটা শুনে যেন মনে হয় মুসলিম'।

আর এখন !!!!

১. নামটা যেন একটু আন কমন হয়, এটলিস্ট ভার্সিটি যাওয়া পর্যন্ত যেন কমন না পরে । আর ভার্সিটিতে যদি কমন পরে তাইলে যেন অন্য ফ্যাকাল্টির কোন ছেলে/ মেয়ে হয়।

২.নামটা অধিকাংশ ক্ষেত্রে ৪ অক্ষরের , আর তার সে কি বাহারি উচ্চারন । অন্তত ২ বার শোনার প্রয়োজন পরে বোঝার জন্য । আমার আরো বেশি , কারন আমার উচ্চারন খ্যেতমার্কা তাই শিওর হওয়া লাগে ঠিক হইছে কিনা ।

৩. নাম শুনে যেন মনে হয় বাঙালি(!!!!), যদিও বাপ মা ২ জনের এক জনেও চায় না বাচ্চা বড় হয়ে বাংলা মিডিয়ামে পড়ুক !!!!

৪. আমার এক বন্ধু তার মেয়ের জন্য নাম সাজেস্ট করার জন্য বললে আমি ৩-৪ টা পেজের এড্রেস দিয়ে দিছিলাম , পরে আমাকে জানায় সবই নাকি কমন লাগে। চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বন্ধুটাকে বলতে পারি নাই হোয়াট কমন মিনস্‌ টু ইউ !!!!!

নাম বিষয়ে সৈয়দ মুজতবা আলী আমার কাছে শ্রদ্ধেয় । তার তরিকার গেলে মুসকিল আসান। সৈয়দ মুজতবা আলী অনেক বেশি বয়েসে বিয়ে করেন , তার তুলনায় তার স্ত্রী ছিলেন অনেক কম বয়েসী,যদিও মিসেস আলী গ্রেজুএশন শেষ করে স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। প্রথম সন্তান ছেলে হবার পর তার স্ত্রী মুজতবা আলীকে জিজ্ঞাসা করেন কি নাম রাখা যায় । মুজতবা আলীর স্বভাব সুলভ উত্তর লিখে ছিল ‘ভজুয়া’। সে সময় কলকাতার সব দারোয়ান রাখা হতো খোট্টা দেশের , তাদের কমন নাম ছিল ভজুয়া ।

এর পর থেকে মুজতবা আলীকে আর কখনো ছেলে মেয়েদের নাম রাখা নিয়ে কষ্ট করতে হয়নি ।

Popular posts from this blog

প্রাগৈতিহাসিক - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়

সমস্ত বর্ষাকালটা ভিখু ভয়ানক কষ্ট পাইয়াছে। আষাঢ় মাসের প্রথমে বসন্তপুরের বৈকুণ্ঠ সাহার গদিতে ডাকাতি করিতে গিয়া তাহাদের দলকে - দল ধরা পড়িয়া যায়। এগারজনের মধ্যে কেবল ভিখুই কাঁধে একটা বর্শার খোঁচা খাইয়া পলাইতে পারিয়াছিল। রাতারাতি দশ মাইল দূরের মাথা - ভাঙা পুলটার নিচে পেঁৗছিয়া অর্ধেকটা শরীর কাদায় ডুবাইয়া শরবনের মধ্যে দিনের বেলাটা লুকাইয়া ছিল। রাত্রে আরো ন ক্রোশ পথ হাঁটিয়া একেবারে পেহলাদ বাগ্দীর বাড়ি চিতলপুরে। পেহলাদ তাহাকে আশ্রয় দেয় নাই। কাঁধটা দেখাইয়া বলিয়াছিল , ' ঘাওখান সহজ লয় স্যাঙ্গাত। উটি পাকব। গা ফুলব। জানাজানি হইয়া গেলে আমি কনে যামু ? খুনটো যদি না করতিস _' ' তরেই খুন করতে মন লইতেছে পেহলাদ। ' ' এই জনমে লা , স্যাঙ্গাত। ' বন কাছেই ছিল , মাইল পাঁচেক উত্তরে। ভিখু অগত্যা বনেই আশ্রয় লইল। পেহলাদ নিজে বাঁশ কাটিয়া বনের একটা দুর্গম অংশে সিনজুরি গাছের নিবিড় ঝোপের মধ্যে তাহাকে একটা মাচা বাঁধিয়া দিল। তালপাতা দিয়া একটা ...

বর্তমান হিন্দু মুসলমান সমস্যা

১৯২৬ সালে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় একটি ভাষন দেন যার নাম “বর্তমান হিন্দু মুসলমান সমস্যা” । এটি বাঙলা প্রাদেশিক সম্মেলনে প্রদান করেন। পরে তা হিন্দু সংঘ পত্রিকায় ছাপা হয় ১৯ শে আশ্বিন ১৯৩৩ সালে। জাতীয় অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক  এর ভাষায় ১৯৩০ সালের দিকে প্রকাশিত শরৎচন্দ্রের বর্তমান হিন্দু মুসলমান সমস্যা পর এত ( আহামদ ছফার বাঙালি মুসলমানের মন ) প্রভোক্যাটিভ রচনা বাংলা ভাষায় পড়ি নাই। কোন একটা কথা বহু লোকে মিলিয়া বহু আস্ফালন করিয়া বলিতে থাকিলেই কেবল বলার জোরেই তাহা সত্য হইয়া উঠে না । অথচ এই সম্মিলিত প্রবল কন্ঠস্বরের একটা শক্তি আছে । এবং মোহও কম নাই । চারিদিক গমগম করিতে থাকে – এবং এই বাস্পাচ্ছন্ন আকাশের নীচে দুই কানের মধ্যে নিরন্তর যাহা প্রবেশ করে , মানুষ অভিভূতের মতো তাহাকেই সত্য বলিয়া বিশ্বাস করিয়া বসে । propaganda বস্তুত এই-ই । বিগত মহাযুদ্ধের দিনে পরস্পরের গলা কাটিয়া বেড়ানই যে মানুষের একমাত্র ধর্ম ও কর্তব্য , এই অসত্যকে সত্য বলিয়া যে দুই পক্ষের লোকেই মানিয়া লইয়াছিল , সে ত কেবল অনেক কলম এবং অনেক গলার সমবেত চীৎকারের ফলেই । যে দুই- একজন প্রতিবাদ করিতে গিয়াছিল ,...

সিরাজুল আলম খান - ব্ল্যাক সোয়ান

মুক্তিযুদ্ধ চলা কালে ট্রেনিং সেন্টারে (ফোল্ডার হাতে) পরিচিতি :  সিরাজুল আলম খান, নোয়াখালীতে ১৯৪১ সালে জন্ম নেয়া এক জন ব্যাক্তি যে বাংলাদেশের জন্মের সাথে জড়িত অত্যান্ত নিবিড় ভাবে। অবিবাহিত একজন মানুষ যাকে বাংলাদেশের রাজনীতি সম্পর্কে সম্মক অবহিতজনের কাছে পরিচিত রহস্যপুরুষ হিসাবে, এছাড়া রাজনৈতিক নেতাদের কাছে তিনি পরিচিত তাত্ত্বিক (theorist) হিসাবে। সিরাজুল আলম খান ভিন্ন ভিন্ন তিন মেয়াদে প্রায় ৭ বছর কারাভোগ করেন। সিরাজুল আলম খান মেধাবী ছাত্র হিসাবে শিক্ষায়তনে সুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন। সিরাজুল আলম খানের বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রী অঙ্ক শাস্ত্রে হলেও দীর্ঘ জেল জীবনে তিনি দর্শন, সাহিত্য, শিল্পকলা, রাজনীতি-বিজ্ঞান, অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, সমাজ বিজ্ঞান, পরিবেশ বিজ্ঞান, সামরিক বিজ্ঞান, মহাকাশ বিজ্ঞান, সংগীত, খেলাধুলা সম্পর্কিত বিষয়ে ব্যাপক পড়াশোনা করেন। ফলে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের উপর গড়ে উঠে তাঁর অগাধ পাণ্ডিত্য এবং দক্ষতা। সেই কারণে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক নিযুক্ত হন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন রাজ্যের অসকস বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৯৬-’৯৭ সনে। ...